তাজবীর সজীব এর সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই PDF

0
    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf : তাজবীর সজীব।

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf

    তাজবীর সজীব এর ক্যারিয়ার উন্নয়ন বিষয়ক বেস্টসেলার প্রকাশনা হচ্ছে 'সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf'.

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এর বাংলা অর্থ হচ্ছে সরবরাহ শিকল ব্যবস্থাপনা।

    'সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf' এর মতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে ইয়াহু আসলে কী উৎপাদন করে! যখন স্টিভ জবস অ্যাপলে ফিরে আসে সে কেবল অ্যাপলকে কাজ করার জন্য একটি অসাধারণ জায়গায় পরিণত করেনি; বরং সে অন্য বহু জিনিসও বাদ দিয়েছে যাতে অল্প কিছু পণ্যের দিকে মনােযােগ দেওয়া যায় এবং ১০ গুণ উন্নত পণ্য নির্মাণ করা যায়। কোন প্রযুক্তিগত কোম্পানিই কেবল মার্কার ওপর বেঁচে থাকতে পারে না।

    একটি একচেটিয়া ব্যবসা নির্মাণ

    আমরা এখানে মার্কা, অর্থনৈতিক পরিধি, নেটওয়ার্ক ও প্রযুক্তি দিয়ে একটি একচেটিয়া ব্যবসার সংজ্ঞা দিলাম । কিন্তু এগুলােকে নিয়ে একত্রে কাজ করতে গেলে আপনাকে একটি বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। সেটা হচ্ছে-আপনার বাজার। আপনার বাজারটিকে খুব সতর্কতার সাথে চয়ন করতে হবে এবং এটাকে ধীরে ধীরে বড় করতে হবে।

    ছােট্ট কোনাে জায়গা থেকে আরম্ভ করুন এবং একচেটিয়া চালিয়ে যান।

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf এর মতে আপনি যেকোনাে উদ্যোগের দিকে তাকান, দেখবেন প্রতিটি উদ্যোগই প্রথম প্রথম খুব ছােট্ট জায়গা থেকে আরম্ভ হয়েছে। এজন্যই, প্রতিটি উদ্যোগের উচিত খুব ছােট্ট একটি বাজার দিয়ে আরম্ভ করা। প্রথম প্রথম আপনি ভুল করবেন এটাই স্বাভাবিক। তাহলে তা ছােট জায়গা থেকেই করছেন না কেন? এটার সুবিধাও আছে। আপনি একটি বড় বাজারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত একটি ছোেট বাজার নিয়ে যদি কাজ করেন তবে বাজারের ওপর আপনি খুব সহজেই কর্তৃত্ব করতে পারবেন। আর আপনি যদি চিন্তা করেন আপনার প্রাথমিক বাজার হয়তাে খুব বড় হতে পারে, তাহলে দেখা যায় বাজার আসলেই বড় এবং সেই বড় বাজারে আপনার দোকানটি কোনাে এক কোণার ছােট্ট দোকান।

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf

    এখন ছােট্ট মানে বাজারবিহীন কিছু নয়। আমরা পেপালের শুরুর দিকে ঠিক এই ভুলটিই করেছিলাম। আমাদের প্রথম পণ্য ছিল পামপাইলটস (PalmPilot)। এর মাধ্যমে লােকজন টাকা লেনদেন করত। এটা বেশ আকর্ষণীয় একটি পণ্য ছিল। আর আমরা ছাড়া এটা তখন অন্য কেউই করত না। যাইহােক, আমাদের লাখাে ব্যবহারকারী ছিল যারা পামপাইলটস ব্যবহার করত, কিন্তু তারা কোনভাবেই একে অপরের সাথে সংযুক্ত ছিল না। এমনকি দেখা গেল, তারা পামপাইলটস হঠাৎ হঠাৎ ব্যবহার করত। আস্তে আস্তে দেখা গেল, আমাদের পণ্যটি কারও দরকার নেই, তাই আমাদের কোন গ্রাহকও নেই।

    এই সমস্যা থেকে আমরা আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করি। এরপর আমরা ইবে’র (ebay) নিলামের দিকে নজর দিই, যেখানে আমরা আমাদের প্রথম ‘সাফল্য খুঁজে পাই। সেই ১৯৯৯ সালের দিকে, ইবে’তে বেশ ভালাে ক্রেতাবিক্রেতা' ছিল। আমরা টানা তিন মাস কঠোর পরিশ্রম করি। এতে করে আমরা ইবে’র ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রায় ২৫% কে সেবা দেওয়ার সুযােগ পেলাম। এতে করে আমরা বুঝতে পারলাম, আমাদের পণ্য যেখানে দরকার এমন জায়গায় নির্দিষ্ট জায়গায় হাজার খানেক লােকজনকে যদি সেবা দেওয়া যায়, তা অনেক
    ভালাে ফলাফল নিয়ে আসবে। লাখাে বিক্ষিপ্ত জনগণের চেয়ে নির্দিষ্ট জায়গার হাজারাে লােক অনেক ভালাে।

    একটি উদ্যোগের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বাজার হচ্ছে একটি ছােট্ট জায়গার বিশেষ কিছু লােকজন, যেখানে অন্য কেউ সেবা দেয় না বা কোনাে প্রতিযােগী নেই। উদ্যোগের প্রথম দিকে যেকোনাে ধরনের বড় বাজার চয়ন করাটা ঠিক সিদ্ধান্ত নয়। কারণ বড় বাজারগুলাে এমনিতেই প্রতিযােগী কোম্পানি দিয়ে ভরপুর। তাই যখনই কোন উদ্যোক্তা একটি ১০০ কোটি টাকার বাজারের ১% পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলে, তাকে এড়িয়ে চলুন।

    কারণ বাস্তব চিত্র পুরােপুরি ভিন্ন। একটি বড় বাজার দিয়ে আরম্ভ করলে হয় সে আরম্ভটি ভালাে করে করতে পারে না, না-হয় সে নিজেকে পূর্ণ প্রতিযােগিতার বাজারে ঠেলে দিয়েছে যেখান থেকে ১% অর্জন করাও খুব কঠিন। আর যদি আপনি সামান্য কিছু লাভ করেও থাকেন তবে আপনাকে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কারণ বাজার চরম প্রতিযােগিতাপূর্ণ। বাজার যখন চরম প্রতিযােগিতাপূর্ণ তখন মুনাফা থাকে শূন্যের কোটায়। 

    পরিধি বা বিস্তৃতি বাড়ানাে

    এবার আপনি যখন একটি নির্দিষ্ট বাজার নিয়ে কাজ করছেন, এই বাজারে কর্তৃত্ব করছেন, তখন আপনি ধীরে ধীরে আপনার বাজারটিকে বড় করবেন। আপনার বাজারের আশেপাশে আনুষঙ্গিক বিষয়ের দিকে নজর দিন। আস্তে আস্তে আপনার সেবার পরিধি বৃদ্ধি করুন। এটা কীভাবে করতে হয় তা আমরা আমাজন থেকে শিখতে পারি। 

    জেফ বেজোসের রূপকল্প ছিলাে সে পুরাে অনলাইন মার্কেটে রাজত্ব করবে, কিন্তু সে সবকিছু নিয়ে আরম্ভ করেনি; বরং সে কেবল বই নিয়ে আরম্ভ করেছে। যদিও বইয়ের প্রকার, ধরন ও বিষয় অনেক, লাখাে বই বাজারে আছে, তবুও তাদের বিন্যাস করাটা সহজ। এছাড়াও এগুলাে পাঠানাে, সংগ্রহ করা ও বিক্রয় করা সুবিধাজনক। এমনকি বাস্তবে একটি দোকান নিয়ে বসে থাকার চেয়ে অনলাইনে লাখাে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানাে একটি সাধারণ ব্যাপার। আবার কিছু দুর্লভ বইও আছে। এভাবে আমাজন খুব নির্দিষ্টভাবে কিছু আগ্রহী লােকজনকে সেবা দেয় যারা বই সম্পর্কে আগ্রহী এভাবে আমাজন আস্তে আস্তে বইয়ের জগতে কর্তৃত্ব করা শুরু করল। 

    আপনি যতদূরেই থাকেন না কেন, আপনার আশেপাশে কোন বইয়ের দোকান থাকুক আর নাই থাকুক অথবা আপনি যত দুর্লভ জিনিসই খোঁজেন না কেন, আপনি আমাজনে পাবেন। এই বিশ্বাস ও আস্থা আমাজন তৈরি করেছে। এরপর আমাজনের হাতে ছিল দুইটি সুযােগ-এক, যারা বই পাঠ করে তাদের সংখ্যা বাড়ানাে; দুই, বইয়ের সাথে সম্পৃক্ত বাজার নিয়ে কাজ শুরু করা। আমাজন কোনটি চয়ন করেছে? আপনি ঠিকই ধরেছেন— দ্বিতীয়টি। আমাজন বইয়ের সাথে সম্পৃক্ত বাজার নিয়ে কাজ শুরু করল : সিডি, ডিভিডি ও সফটওয়্যার।

    আমাজন এইভাবে আস্তে আস্তে তাদের পণ্য তালিকা বৃদ্ধি করতে লাগল। আর ধীরে ধীরে আমাজন হয়ে উঠল বিশ্বের একটি মুদি দোকান। (মুদি দোকান মানে যে দোকানে সবই পাওয়া যায়। এমনকি আমাজন নামটির মধ্যেও এর পরিধি ও পরিকল্পনা স্পষ্ট ফুটে ওঠে। আমাজন বনের বৈচিত্রতা যেমন আমাদের মুগ্ধ করে তেমনি আমাজন ডটকমের প্রথম লক্ষ্য ছিল বিশ্বের প্রতিটি বইকে তাদের বই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। আর এখন এটা বিশ্বের প্রতিটি পণ্যের সম্ভার হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছে।

    ঝামেলা কোরাে না

    অনুবাদে যাওয়ার আগে আমি একটু ওমর খৈয়ামের কথা বলতে চাই। আমি আজ মােহম্মদ বরকতুল্লাহর বই পারস্য প্রতিভা পাঠ করছিলাম। বই থেকে কিছু লেখা উল্লেখ করছি, যা আপনার চিন্তা চেতনার জগৎকে প্রসারিত করবে।

    ‘অতএব পরলােকের ভরসায় জীবনকে সুখ হইতে বঞ্চিত করিও না। মুহূর্তের পর মুহূর্তের ভিতর দিয়া জীবন ক্রমে নিঃশেষ হইয়া আসিতেছে। এ জীবনের সার্থকতা কর। প্রতি মুহূর্তটিকে আঁকড়িয়া ধরিয়া উপভােগ কর—সূর্তি কর, আনন্দ কর। যে-মুহূর্ত পিছনে পড়িল উহা আর ফিরিয়া আসিবে না, উহার জন্য অনুশােচনা করিও না। 

    কবি বলেন: সাকী গমে ফারায়ে হারিফান চে খােরী পেশ আর পেয়ালারা কে শব মিগােজারাদ। খৈয়াম।
    কালি কী হইবে সেই ভয়ে আজ
    অনুশােচনায় কী ফল বল; আয়ু নিশীথিনী অবসান হয়— হে সাকি, পেয়ালা অধরে তােল।

    ‘কবির মতে যাহারা পার্থিব রাজত্ব বা ঐশ্বর্যের জন্য, ভাবী সুখের আশায়, বর্তমানে কঠোর সাধনায় জীবনের মুহূর্তগুলি ব্যয় করিতেছে; অথবা যাহারা পরলােকে স্বর্গলাভাষায় এ জীবনে ঘাের তপস্যায় কাল হরণ করিতেছে, সর্ববিধ ভােগের পথ রুদ্ধ করিয়া জীবনকে নিষ্পেষিত করিতেছে—তাহারা সকলেই ভ্রান্ত। সুখের মাহেন্দ্রযােগ হেলায় হারাইয়া তাহারা দূর অনাগতের আশায় বসিয়া আছে। হা! হা! কী দুরাশা!

    এই রচনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাকে বর্তমানের গুরুত্বকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া। আপনি অতীতের সমস্যার কারণে অনুশােচনা করতে পারেন বা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ভয়ে ভীত হতে পারেন। কিন্তু এগুলাের মাধ্যমে আপনি আপনার বর্তমানের সুখ ও সমৃদ্ধি ধ্বংস করছেন। 

    মহান ব্যক্তিদের জীবনী ও তাদের মহান কর্ম সম্পর্কে নিয়মিত পাঠ করুন। এতে করে নিজের মধ্যেও মহান কাজ করার প্রেরণা সৃষ্টি হবে। আমি কয়েকজন বিত্তশালী লােককে চিনি যাদের টাকা আছে কিন্তু মানসিকভাবে তারা অসুখী। অর্থ আয় করুন তবে তা যেন আপনার মানসিকতাকে অসুস্থ না করে।

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf by তাজবীর সজীব

    আবার অনুবাদে ফিরে যাচ্ছি। সিলিকন ভ্যালিতে এখন ঝামেলার কোনাে শেষ নেই। মূল ইংরেজি শব্দটি হচ্ছে disruption যার বাংলা মানে হচ্ছে ভাঙ্গন, চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থা বা ঐক্যনাশ। disruption দ্বারা বােঝানাে হচ্ছে যে একটি কোম্পানি নিম্ন মানের একটি পণ্য বাজারে এনে নিম্ন দামে বিক্রয় করে। তারপর আস্তে আস্তে পণ্যের মান উন্নয়ন করে। পর্যায়ক্রমে দেখা যায় পণ্যটি অন্যান্য ভালাে ভালাে স্বনামধন্য কোম্পানির পণ্যকেও পিছনে ফেলে দিচ্ছে। ঠিক এটাই ঘটেছে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ও পারসােনাল কম্পিউটারের ক্ষেত্রে। 

    প্রথমে পারসােনাল কম্পিউটার একটি অবাঞ্চিত পণ্য ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বাজারে একটি কর্তৃত্ব সৃষ্টি করল। আজকে হয়তাে মােবাইলও পারসােনাল কম্পিউটারের সাথে ঠিক একই কাজ করছে।

    এটা তাে একটি সামাজিক ঝোঁক বর্ণনা করলাম। কিন্তু একজন উদ্যোক্তার জন্য বা ব্যবসায়ীর জন্য এ ধরনের কাজ খাটে না। এজন্য আপনাকে পুরােপুরি ঠিকঠাক একটি পণ্য নিয়ে বাজারে নামতে হবে। আর সে পণ্য যদি পুরাতন কোনাে কোম্পানির থেকে থাকে তবে এটা তাে আর একচেটিয়া ব্যবসা হবে না।

    অবশ্য এ ধরনের ঝামেলাদায়ক পণ্য আরও ঝামেলা আকর্ষণ করে। যেমন ছিদ্রান্বেষী লােকজন সমস্যা খোঁজে, তারা আরও সমস্যা খুঁজে পায়। আবার অমনযােগী ছাত্রদের যেমন প্রায়ই অধ্যক্ষের কক্ষে যেতে হয়। এ ধরনের সমস্যা ব্যবসায়িক জগতেও হয়। ঝামেলাদায়ক কোম্পানি প্রায়ই এমন এমন লড়াইয়ে লিপ্ত হয় যাতে তারা কখনাে জয়ী হতে পারে না। ধরুন, নেপস্টার (Napster)।

    নামটার মধ্যেই কেমন ঝামেলা ঝামেলা মনে হয়। ১৯৯৯ সালে তারা সংগীত রচনাকারী শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলােকে চ্যালেঞ্জ করে বাজারে নামে। এর পরের বছর টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে আসে। তারপর বছর দেড়েক পরেই তারা দেউলিয়া হয়ে যায়।

    পেপালকেও হয়তাে ঝামেলাদায়ক মনে হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনাে কোন বিরাট কোম্পানিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করিনি। এটা সত্য যে, আমরা ভিসা কার্ডের কিছু ব্যবসা কমিয়ে দিয়েছি। তবে আমরা বাজারে অনলাইনে ক্রয় করার ক্ষেত্রে যতটা এগিয়ে গেছি ততটাই ভিসা কার্ডের জন্য বাজার প্রসারিত হয়েছে। আমরা ভিসা কার্ড প্রতিষ্ঠান থেকে যতটা নিয়েছি তারচেয়েও বেশি দিয়েছি। 

    দেখা গেল পুরাে ব্যাপারটিই ইতিবাচকভাবেই ঘটেছে। কিন্তু নেপস্টার আমেরিকার সংগীত রচনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলাের সাথে একটি নেতিবাচক প্রতিযােগিতায় নামে। তাই এই ঘটনার মূল শিক্ষা হচ্ছে ঝামেলা করবেন না; যতটা সম্ভব প্রতিযােগিতা এড়িয়ে চলবেন।

    Supply Chain Management bangla book pdf

    বাংলায় প্রবাদ আছে, ‘আগে গেলে বাঘে খায়, পরে গেলে স্বর্ণ পায়! যাইহােক, আপনি হয়তাে এই কথাটি অনেকবারই শুনেছেন। তবে আজ ব্যবসায়িক জীবনে এর গুরুত্ব বুঝত্নে পারবেন। অনেকে অবশ্য বলে প্রথমে কাজ করার সুবিধা বেশি। কিন্তু এটা সত্য নয়। 

    আপনি যখন একটি বাজারে প্রবেশ করবেন তখন আপনি যে সাথে সাথেই ভালাে মানের মুনাফা নিয়ে বাড়ি ফিরবেন, তা নয়। তবে প্রথমে চলাটা একটি কৌশল, এটাই লক্ষ্য নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে আপনার আয় যেন ভবিষ্যতেও নিয়মিত আসে। তাই প্রথমে কাজ আরম্ভ করা খুব একটা ভালাে জিনিস না, যদি অন্য কেউ এসে আপনাকে পথে বসিয়ে দেয় তবে তাে কথাই নেই। তাই শেষে পদক্ষেপ নেওয়াই সবচেয়ে উত্তম। 

    একটি নির্দিষ্ট বাজারের প্রতি, একটি নির্দিষ্ট চাহিদার প্রতি সবশেষে আপনি যে পদক্ষেপ নিবেন তাই হবে সবচেয়ে সুবিধাজনক। কারণ তখন আপনি অন্যদের দেখে শিখেছেন কী কাজে লাগবে; আর কী কাজে লাগবে না। এটাই হচ্ছে ছােট বাজার নিয়ে রাজত্ব করা এবং ধীরে ধীরে বড় কোনাে স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়া। এইক্ষেত্রে ব্যবসা হচ্ছে দাবা খেলার মতাে। 

    বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন জোসে রাউল কাপাব্লাঙ্কা এটাকে চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আপনাকে অবশ্যই শেষ চাল, মানে বাজিমাতের চালটি অন্য সবকিছুর আগে চিন্তা করে রাখতে হবে।'

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf Free


    Book Publisher Author  F Size
    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট  প্রিয়মুখ তাজবীর সজীব ৫ মেগাবাইট
    Bookshop Price Language  T Page
    Durdin Magazine Only 300 Taka Bangla 208

    অনুবাদক তাজবীর সজীব তার বাস্তব জীবনের একটি চরম শিক্ষা বর্ণনা করছে। আমি ২০১৫ সালে আমার প্রথম অনূদিত বই ‘চিন্তা করুন এবং ধনী হােন প্রকাশ করি। এই বইটি যে Think and Grow Rich এর বাংলা অনুবাদ এটা বােঝাতে আমার অনেক বেগ পেতে হয়েছে। আমি চিন্তা করেছিলাম এই বইটি বিক্রি করে। আমি আমার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪টি অনুপ্রেরণার বই অনায়াসে প্রকাশ করবাে। কিন্তু তা মােটেই ঘটেনি। তখন কেবল আমিই এই বইটি প্রথম বাংলা অনুবাদ করে প্রকাশ করি।

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf free

    যেহেতু আমার শিরােনামে ইংরেজি নামটি ছিল না সেহেতু অন্যরা এটা অনুবাদ করে বাংলিশ শিরােনাম দিয়ে বই প্রকাশ করে। আমার বইটি যে বাংলিশ শিরােনামের কারণে চলেনি তা বুঝতে আমার দুই বছর লেগেছে। তাে যাইহােক, আমি পরবর্তীতে যে বই অনুবাদ করেছি সেগুলাে বাংলিশ নামেই প্রকাশ করেছি এবং পাঠক দ্বারা সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু এই চিন্তা করুন এবং ধনী হােন বইয়ের শিরােনাম পাল্টে ‘থিংক এন্ড গ্রো রিচ' শিরােনাম দিয়ে আমি আবার নতুন করে, নতুন বাক্য বিন্যাস করে, আরও পরিশ্রম করে অনুবাদকে সহজসাধ্য করতে হয়েছে।

    তবে আমিও লেখক পিটার থিয়েলের সাথে একমত যে প্রথমে চলাটা একটি কৌশল, তবে এটা লক্ষ্য নয়। আমার লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সাল এবং ৬৪টি বই। আমি শুরু করেছি এবং একদিন শেষও করবাে। তবে আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের জন্য উপকারী সেবা সম্পন্ন করা। আর বাংলাদেশের প্রকাশক, লেখক সহ সকলকে এটা দেখানাে যে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য আরও ব্যক্তিগত উন্নয়নমূলক রচনা, বই প্রভৃতি দরকার।

    মানুষকে তাদের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য, তাদের জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য লেখকদের উচিত আরও বাস্তবভিত্তিক, চিন্তাশীল রচনা সৃষ্টি করা। মানুষকে অনুপ্রাণিত করা, উচ্চাকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে মানুষকে উৎসাহী করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা যেন কেবল বিদেশি লেখকদের, মহান ব্যক্তিদের দেখে তাদের পূজা না করি, তাদের দেখে শিখি এবং সেই শিক্ষা নিয়ে আমরাও যেন, মহান ব্যক্তি হয়ে এই বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। আমি কয়েকদিন আগে একটি বই পড়েছিলাম। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ অনূদিত এসকিলাসের শৃঙ্খলিত প্রমিথিউস। প্রমিথিউস একজন গ্রিক দেবতা। তার একটি কথা আমার কানে প্রায়ই বাজে। 

    কথাটি হচ্ছে,

    ‘মৃত্যু আমার বিধিলিপি নয়। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রতিটি উদ্যোক্তা একদিন এমন করেই বলবে,

    ‘পরাজয় আমার বিধিলিপি নয়।' তারা সকলেই তাদের জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করে বলবে আমি সফল হয়েছি, আমি মানুষের জন্য ও নিজের জন্য যা করতে চেয়েছি তা করেছি।

    Read More: The Hidden Power Bangla PDF

    সরবরাহ শিকল ব্যবস্থাপনা বই pdf

    সরবরাহ শিকল ব্যবস্থাপনা বই pdf এর মতে ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি করা হয় তা হচ্ছে সাফল্য কি ভাগ্য থেকে আসে; নাকি দক্ষতা থেকে আসে?

    আসুন দেখি সফল লােকজন কী বলে। ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল একজন সফল লেখক। তিনি তার লেখা আউটলায়ার্স বইতে লিখেছেন সাফল্য হচ্ছে ‘ভাগ্যবান কিছু সুযােগ ও ইচ্ছামত কিছু সুবিধার মিশ্রণ।' 

    বিখ্যাত বিনিয়ােগকারী ওয়ারেন বাফেট নিজেকে একটি বীর্যবান সঙীকে একজন ভাগ্যবান সদস্য হিসেবে অভিহিত করেছেন। আর নিজেকে ‘লটারি জয়ী' হিসেবেও উল্লেখ করেন। 

    আমাজন ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসও তার প্রতিষ্ঠানের সাফল্যকে ‘অবিশ্বাস্য একটি সরলরেখাবলে উল্লেখ করেন। তিনি প্রায়ই মজা করে বলেন যে এটা ছিল ‘অর্ধেক ভাগ্য, অর্ধেক ঠিক সময়; আর বাকিটা ছিল মস্তিষ্ক।' বিল গেটস তাে আরও এগিয়ে গিয়ে বলেন তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন, কারণ তিনি এমন কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতা নিয়ে জন্মেছিলেন। যদিও এটা ঠিক পরিষ্কার নয় এমনটা সম্ভব কিনা।

    হয়তাে এই ব্যক্তিরা একটু কৌশলগত দিক দিয়ে বিনয়ী। তাই তারা এমনটা বলছেন। যাইহােক, আমরা যদি আমাদের বিগত বছরের উদ্যোক্তাদের দেখি তবে দেখবাে সাফল্য হচ্ছে সুযােগ দ্বারা তৈরি একটি পণ্য। মানে সুযোেগ কাজে লাগাবেন তাে সাফল্য অর্জন করবেন। শত শত লােক হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা আরম্ভ করে। কিন্তু খুব অল্পই, যেমন স্টিভ জবস, জ্যাক ডােরজি ও ইলন মাস্ক, তারা হাজারকে লাখ কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত করতে পেরেছেন। যদি সাফল্য কেবল ভাগ্যের ওপর নির্ভর করত তবে আজকে এই ধরনের সফল উদ্যোক্তাদের আমরা খুঁজেই পেতাম না।

    Supply chain management in Bangla 

    ২০১৩ সালে, টুইটার ও স্কয়ার ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডােরজি তার বিশ লক্ষ অনুসারীদের জন্য লিখেন, 'সাফল্য কখনাে দুর্ঘটনাবশত ঘটে না।

    উত্তরে বেশিরভাগ মন্তব্যই ছিল নেতিবাচক। যেমন ধরুন দি আটলান্টিক ম্যাগাজিনের সাংবাদিক আলেক্সিস মাদ্রাজল বলেছেন, “কোটিপতি সব সাদা। পুরুষরা বলেছেন, 'সাফল্য কখনাে দুর্ঘটনাবশত ঘটে না।" এটা সত্য যে, যারা ইতােমধ্যেই সফল তাদের জন্য নতুন কিছু করা তেমন কঠিন কিছু নয়। কারণ তাদের সম্পদ আছে, লােকজনের সাথে পরিচিতি আছে এবং অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু আমরা হয়তাে ব্যাপারটিতে একটু বেশি তাড়াহুড়া দেখাচ্ছি। কেউ যদি বলে সে পরিকল্পনা অনুযায়ী সফল হয়েছে তবে আমরা খুব তাড়াতাড়ি তার আশেপাশের সুবিধা দেখিয়ে তার সাফল্যের কারণ বর্ণনা করতে চাই। আসলে কী তাই!

    এই সন্দেহকে কি বাস্তবে সমাধান করা সম্ভব? দুর্ভাগ্যবশত তা করা সম্ভব নয়। কারণ কোম্পানি এমন এক জিনিস যা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে আমরা কী করি? আমরা একটি জিনিসের ১,০০০টি পরীক্ষানিরীক্ষা করি। যাতে বিভিন্ন অবস্থায় তার বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে বােঝা যায়। কিন্তু কোম্পানির ক্ষেত্রে কি তা হয়?

    ধরুন, ফেসবুক আমরা সেই ২০০৪ এ ফিরে গেলাম। ১,০০০টি বিশ্ব বিবেচনা করলাম। তারপর, এই ১,০০০ বিশ্বে ১,০০০টি ফেসবুক চালু করলাম। এবার দেখবাে কোন বিশ্বে ফেসবুক কেমন করছে! কিন্তু বাস্তবে এই ধরনের পরীক্ষা অসম্ভব। প্রতিটি কোম্পানিকেই একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে তার কাজ আরম্ভ করতে হয় এবং প্রতিটি কোম্পানিই মাত্র একবার আরম্ভ করা যায়। তাই নমুনা যদি কেবল একটি হয় তখন সেখানে পরিসংখ্যান কাজ করে না।

    বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে একটি রেনেসাঁ শুরু হয়। যাকে আলােকপ্রাপ্ত যুগও বলা হয়। তখন থেকে আমরা জানি ভাগ্য হচ্ছে এমন কিছু যার ওপর কর্তৃত্ব হবে, ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করতে হবে। আমরা সকলেই এই ব্যাপারে সম্মত ছিলাম, যা করা সম্ভব তাই করা উচিত, আর যা করা সম্ভব নয় তার দিকে মনােযােগ দেওয়ার দরকার নেই। 

    রালফ ওয়ার্ল্ডে এর্মাসনও তাই বলেছেন, দুর্বল লােক ভাগ্যে বিশ্বাস করে, পরিস্থিতির ওপর বিশ্বাস করে ... কিন্তু শক্তিশালী লোক কাজ ও কারণের ওপর বিশ্বাস করে।' 

    রুয়াল আমুনসেন ছিলেন একজন বিখ্যাত নরওয়েজীয় মেরু অভিযাত্রী। তিনি ১৯১২ সালে প্রথম দক্ষিণ মেরুতে পদাপর্ণ করেন। 

    তিনি লিখেছেন, ‘বিজয় কেবল তার জন্যই অপেক্ষা করে যার সবকিছু প্রস্তুত আছে—লােকজন অবশ্য এটাকে ডাকে ভাগ্য বলে।' 

    এটা কেউ বলতে পারবে না যে, দুর্ভাগ্য নেই। তবে আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম মনে করতাে তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম দ্বারা নিজেদের ভাগ্য গড়বে।

    আপনি যদি মনে করেন আপনার জীবন হচ্ছে কেবল হঠাৎ কোন ঘটনা দ্বারা সৃষ্ট একটি জীবন। তবে কেন এই বইটি পড়ছেন? উদ্যোগ সম্পর্কে পড়াটা আপনার জন্য অহেতুক একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আপনি যদি বিশ্বাসই করেন যেসব লােকজন সাফল্য অর্জন করেছেন তারা কেবল লটারির টিকেটের মতাে রাতারাতি জয়ী হয়েছেন, তাহলে কীভাবে উদ্যোগ নিতে হয় তা জেনে আপনার কী লাভ! 

    সুট মেশিন নামক এক ধরনের লটারি ধরার যন্ত্র আছে। আপনি সেটা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আপনি হাবলুদের জন্য সুট মেশিন বা Slots for Dummies নামক বইটি পড়ে দেখতে পারেন। এটা আপনাকে যন্ত্র সম্পর্কে বলবে, কোন প্রতীকের কী মানে তা বলবে; কিন্তু এটা আপনাকে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলতে পারবে না।

    আপনার কি মনে হয় বিল গেটস কেবল বুদ্ধিমত্তার জোরে জিতে গেছেন? নাকি শেরিল স্যান্ডবার্গ, ফেসবুকের প্রধান অপারেটিং অফিসার, সােনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নিয়েছেন? নাকি তার ঝোঁকটি জন্ম থেকেই এদিকে ছিল? আমরা যখন এ ধরনের ঐতিহাসিক প্রশ্ন নিয়ে তর্ক করবাে, তখন দেখবেন ভাগ্য আসলে অতীত একটি ব্যাপার। এরচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাদের সাফল্য কি হঠাৎ কোনাে সুযােগ দ্বারা সৃষ্ট, না তাদের নকশা করা?

    আপনি কি আপনার ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন?

    আপনি ভবিষ্যৎকে একটি নির্দিষ্ট আশা আকাঙ্ক্ষায় বাঁধতে পারেন অথবা আপনি চিন্তা করতে পারেন যে, ভবিষ্যৎ হচ্ছে একটি অনিশ্চিত বিষয়। যদি আপনি ভবিষ্যৎকে নির্দিষ্টভাবে চিন্তা করেন, তাহলে আপনি আগে থেকেই একটু সতর্ক হতে পারবেন এবং এটাকে নিজের মতাে করে নির্মাণ করতে কাজ করবেন। আর যদি আপনি একে অনিশ্চিত একটি বিষয় রূপে চিন্তা করেন তবে আপনার ভবিষ্যৎ হবে যাচ্ছেতাই একটি ব্যাপার, আপনি এর ওপর কর্তৃত্ব করার বদলে আশা ছেড়ে দিবেন।

    (ইসলামী বিশ্বাসেও ভাগ্যের পিছনে না ছুটে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। তিরমিযী শরিফের ২৫১৭ নং হাদিসে আছে : আনাস ইবনু মালিক (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনাে একজন

    লােক বললাে, হে আল্লাহর রাসূল (সা:)! আমি কি সেটা (উট) বেঁধে রেকে আল্লাহ তা'আলার উপর ভরসা করবাে, না বাঁধন খুলে রেখে আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করবাে? তিনি বললেন, তুমি সেটা বেঁধে রেখে (আল্লাহ তা'আলার উপর) ভরসা করবে।) 

    আমাদের অনির্দিষ্ট মনােভাব থেকে আজকের এই অরাজকতাপূর্ণ বিশ্ব তৈরি হয়েছে। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চিত ছিলাম। তাই আজকের বিশ্ব একটি যাচ্ছেতাই জায়গা হয়ে উঠেছে। এটার মূল সারবস্তু হচ্ছে : লােকজন যখন কাজ করার মতাে পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে না তখন তারা পূর্বেকার কিছু নিয়ম নীতি মেনে একটি অবস্থা তৈরির চেষ্টা করে। যেমন আজকের আমেরিকা। 

    আমরা এখন আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলােতে অতিরিক্ত কর্মসূচি' বা extracurricular activities এ বেশি উৎসাহ দিচ্ছি। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলােতে দেখা যায় যেসব ছাত্ররা উচ্চাকাঙ্ক্ষী তারা আরও দক্ষ ছেলেদের সাথে পাল্লা দিচ্ছে। এভাবে সে যখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠে, তখন সে একযুগেরও বেশি সময় শেষ করেছে তার সিভিতে ‘অতিরিক্ত কী কী করেছে তার একটি তালিকা তৈরি করতে। সে একটি অপরিচিত ও অজানা ভবিষ্যতের জন্য পুরােপুরি প্রস্তুত। যাই আসুক না কেন—সে প্রস্তুত। আসলে সে কোনকিছুর জন্যই প্রস্তুত নয়।

    Supply Chain Management Bangla Pdf 

    এখন এর বিপরীতে কিছু কথা বলি। আর এই কথাগুলাে আমার দৃঢ় বিশ্বাস থেকে বলা। মধ্যবিত্ত লােকজনের মতাে সবকিছুর পিছনে ধাবিত হওয়া এবং একে ‘সর্বগুণসম্পন্ন বলে প্রশংসা করা মােটেও উপযুক্ত নয়। একজন ব্যক্তিত্ববান পুরুষ কেবল একটি জিনিসেই দক্ষ হতে চায় এবং হয়। সে অবিশ্রান্তভাবে বিভিন্ন ধরনের কাজে মন না দিয়ে কেবল একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করে। সে হয়ে ওঠে একজন একচেটিয়া ব্যক্তি। আজকের তরুণরা অবশ্য একাজ করে না। কারণ তাদের আশেপাশের সবাই নির্দিষ্টতার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। কেউই আজকে আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলােতে কেবল একটি বিষয়ে দক্ষ হতে যায় না। অবশ্য আপনি যদি কেবল ছক্কা মারতে পারেন তাহলে ভিন্ন কথা।

    আপনি ভবিষ্যৎকে আজকের থেকে ভালােও আশা করতে পারেন অথবা খারাপ। আশাবাদীরা ভবিষ্যকে সাধুবাদ জানায়; আর নিরাশাবাদীরা এটাকে ভয় পায়। এই ব্যাপারটি নিয়েই আমাদের সামনে চারটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলাে নিয়েই বলছি :

    অনির্দিষ্ট নিরাশাবাদ

    প্রত্যেক সংস্কৃতিরই একটি উপকথা থাকে। যাকে বলা হয় সােনালি যুগ। বাঙলায় যেমন দুধ ভাতে বাঙালি। অথবা টাকায় এক মণ চাল। সব সংস্কৃতিতেই মনে করা হয় যে আমরা সেই সোনালি যুগ থেকে ধীরে ধীরে পিছয়ে যাচ্ছি। এজন্যই বিশ্বের অধিকাংশ লােক নিরাশাবাদী। এমনকি আজকের এই বিশ্বেও আমাদের জনজীবনের অনেকাংশ নিরাশা কর্তৃত্ব করে। একজন নিরাশাবাদী লােক ভবিষ্যতের দিকে বিবর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। কিন্তু সে যে কী করবে সেই ব্যাপারেও সে নিশ্চিত নয়। 

    ১৯৭০ সাল, মানে গত শতাব্দীর সত্তর দশক থেকে ইউরােপ মহাদেশ আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ভুগছে; আর তখন থেকেই এই নিরাশাবাদী শীতল বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। আজকে পুরাে ইউরােপ ধীর গতিতে বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং কেউ এই ব্যাপারে কোনাে দায় নিচ্ছে না। এ ব্যাপারে। ইউরােপের কেন্দ্রিয় ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না করে তাৎক্ষণিক কিছু একটা করে। চাপা দিতে চাচ্ছে। আমেরিকার ডলারের মধ্যে সাধারণত লেখা থাকে : ‘আমরা আল্লাহতে বিশ্বাস করি'। ইউরােপের কেন্দ্রিয় ব্যাংকও ইউরােতে এরকম কিছু লিখতে পারে : শাক দিয়ে মাছ ঢাকা'।

    আপাতত ইউরােপিয়ানদের আচরণ দেখে তাে তাই মনে হচ্ছে। তারা ঘটনা ঘটার পর প্রতিক্রিয়া করে এবং আশা করে যেন এরচেয়ে খারাপ কিছু না ঘটে। অনির্দিষ্ট নিরাশাবাদীরা এই অপরিহার্য পিছিয়ে পড়া পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। তারা এটাও জানে না এটা কী দ্রুত ঘটবে, না ধীরে ঘটবে; এটা কী আকস্মিক ঘটবে, না পর্যায়ক্রমে ঘটবে। সে যা করতে পারে তা হচ্ছে শুধু অপেক্ষা করা। তাহলে এই অবসরে কী কী করা যায়—খাও, দাও আর ঘুমাও। ওহ! এর মধ্যে বিয়েও করা যায়। যেমনটি এখন পুরাে ইউরােপ জুড়ে হচ্ছে। কেবল ঘুরে বেড়াও, আর বেড়াও।

    নির্দিষ্ট নিরাশাবাদ

    একজন নির্দিষ্ট নিরাশাবাদী বিশ্বাস করে যে ভবিষ্যৎকে জানা যায়, কিন্তু যেহেতু ভবিষ্যৎ বর্ণহীন, নিরানন্দ, তাই তাকে অবশ্যই এর জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আশ্চর্যজনকভাবে বর্তমানের চীন দেশ এই নির্দিষ্ট নিরাশার জন্য সবচেয়ে ভালাে উদাহরণ। 

    যখন আমেরিকার জনগণ দেখলাে যে, চীনের অর্থনীতি ২০০০ সালের পর থেকে ১০% বাৎসরিক হারে বাড়ছে, তখন আমরা চিন্তা করলাম একটি আত্মবিশ্বাসী দেশ তার ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু আসলে তা নয়। এর কারণ হচ্ছে। আমরা, আমেরিকানরা যেহেতু এখনও আশাবাদী, তাই আমরা আমাদের আশাবাদ চীনের ওপর আরােপ করেছি। আর চীনের দৃষ্টিকোণ থেকে, এখনও অর্থনৈতিক বৃদ্ধিটি পুরােপুরি ঘটেনি। অন্যান্য সব দেশ ভয়ে আছে যে, চীন সারা বিশ্বের ওপর রাজত্ব করবে; আর চীন ভয়ে আছে সে এটা করতে পারবে না বলে।

    চীন এত দ্রুত উন্নতি করতে পারছে কারণ এটার আরম্ভ বিন্দু বা মূল ভিত্তি ততটা মজবুত নয়। চীনের জন্য অগ্রগতির সবচেয়ে সহজ মাধ্যম ছিল বিরামহীনভাবে সবকিছু নকল করা, যা পশ্চিমের দেশগুলাে ইতােমধ্যেই শেষ করে ফেলেছে এবং চীন তা করেছে। বেশি বেশি কাঠ দিয়ে চুলার আগুন বাড়িয়েছে। আরও কারখানা, আরও উঁচু উঁচু আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণ করেছে। কিন্তু চীনের যে বিশাল জনসংখ্যা, তার নিত্যনতুন চাহিদার চাপে সম্পদ সীমিত হয়ে এসেছে, দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত দেশগুলাের জনগণের যে জীবনমান রয়েছে তা চীন কখনাে তার জনগণকে দিতে পারবে না এবং এটা চীনও জানে।

    এজন্যই চীনের নেতৃত্ব নির্দিষ্ট নিরাশাবাদের এই পদ্ধতির মধ্যে ডুব দিয়েছে এবং ব্যাপারগুলাে এখন আরও খারাপের পথে যাচ্ছে। চীনের পূর্বতন সব নেতাই ছােটবেলায় দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছে। তাই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যখন তাদের নেতার দিকে তাকায়, দেশের ভবিষ্যতের দিকে তাকায় তখন অনিবার্য ধ্বংস এড়ানাের কোন পথ খুঁজে পায় না। 

    এমনকি চীনের জনগণও ব্যাপারটি অনুভব করে যে, শীঘ্রই শীতকাল আসছে। অবশ্য বাইরের লোকজন চীনের ভিতরে এত সব উন্নয়ন দেখে খুবই মুগ্ধ হয়ে পড়েছে। কিন্তু তারা এটা দেখছে না যে, চীনের ধনবান লােকেরা দেশ থেকে টাকা নিয়ে সরে পড়ার পাঁয়তারা করছে। অপেক্ষাকৃত গরিব লােকেরা যতটুকু সম্ভব সঞ্চয় করার চেষ্টা করছে। তারা আশা করছে এটা হয়তাে যথেষ্ট হবে। চীনের প্রায় প্রতিটি শ্রেণির নাগরিক চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে মারাত্মক সচেতন।

    নির্দিষ্ট আশাবাদ

    একজন নির্দিষ্ট আশাবাদীর কাছে বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যৎ উত্তম হবে যদি সে এটাকে উত্তম করার জন্য পরিকল্পনা ও কাজ করে। একদম সপ্তদশ শতাব্দী থেকে ১৯৫০ বা ষাটের দশক পর্যন্ত পশ্চিমা বিশ্বকে নির্দিষ্ট আশাবাদীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক এবং ব্যবসায়ীরা বিশ্বকে আরও ধনী, স্বাস্থ্যবান ও দীর্ঘআয়ু করেছে যা পূর্বের লােকজন কল্পনাও করেনি। কার্ল মাকর্স ও ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস উভয়ই উনিশ শতকের ব্যবসায়িক গােষ্ঠীর মধ্যে এটা স্পষ্টভাবে দেখতে পান।

    পূর্বতন যেকোনাে প্রজন্মের চেয়ে বর্তমানের প্রজন্ম বড় বড় প্রকাণ্ড সব উৎপাদনশীল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করছে। মানুষ প্রকৃতির অধীনতাকে কমিয়ে এনে যন্ত্রপাতি ও কারখানা নির্মাণ করেছে, রসায়ন বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে এবং কৃষিকাজে প্রয়ােগ করেছে। বাষ্পকে পরিচালিত করেছে, রেললাইন তৈরি। করেছে, ইলেক্ট্রিক টেলিগ্রাফ সৃষ্টি করেছে এবং পুরাে মহাদেশকে চাষাবাদের জন্য নদীর সাথে খাল খনন করে প্রস্তুত করেছে। পূর্বে পৃথিবীর জনসংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন তা বিস্ময়করভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান উৎপাদন ব্যবস্থা এতটাই বিস্ময়কর যে, আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম এরকম একটি প্রকাণ্ড উৎপাদন ব্যবস্থা যে সৃষ্টি করা সম্ভব তা সম্পর্কে পুরােপুরি অসচেতন ছিল।

    প্রতিটি প্রজন্মের উদ্ভাবক এবং অগ্রদূতগণ পূর্ববর্তী প্রজন্মকে ছাড়িয়ে গেছে। ১৮৪৩ সালে লন্ডনের লােকজন টেমস নদীর নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি করে, ১৮৬৯ সালে ইউরােপ ও এশিয়ার মধ্যে জাহাজ চলাচলের সুবিধার জন্য সুয়েজ

    খাল খনন করা হয়। ১৯১৪ সালে পানামা খাল খনন করা হয়। এতে করে। . আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর সংযুক্ত হয়। এমনকি ১৯২৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় যে ব্যবসায়িক বিপর্যয় ঘটে তাও আমেরিকার বিরামহীন অগ্রগতিতে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ১৯২৯ সালে দি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংএর নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয় এবং শেষ হয় ১৯৩১ সালে। ভবনটি ১০২ তলা। ১৯৩৩ সালে দ্য গােল্ডেন গেট ব্রিজ নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয় এবং শেষ হয় ১৯৩৭ সালে। 

    এটা তখনকার দিনের সবচেয়ে বড় ঝুলন্ত ব্রিজ ছিল। এরপর ১৯৪১ সালে আরম্ভ হয় ম্যানহাটন প্রকল্প এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪৫ সালে এ প্রকল্প থেকে বের হয় বিশ্বের প্রথম আণবিক বােমা। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, শান্তিকালীন সময়েও আমেরিকা এগিয়ে যেতে থাকে। 

    যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলাে রাজ্যের মধ্যে মহাসড়ক নির্মাণের কাজ আরম্ভ হয়। এটা ১৯৫৬ সাল থেকে আরম্ভ হয় এবং ২০,০০০ মাইলের এই মহাসড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৬৫ সালে। এমনকি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এই গ্রহ থেকেও বের হওয়া সম্ভব। ১৯৬১ সাল থেকে নাসা অ্যাপােলাে প্রকল্প চালু করে। যে প্রকল্প থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ১২ জন পুরুষ চাঁদে পা রাখে।

    সাহসী প্রকল্প যে শুধু রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি বিজ্ঞানীদের দখলে থাকতে হবে তাও নয়। ১৯৪০ সালের শেষের দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তি, নাম জন রেবের, সান ফ্রান্সিস্কোর ভূপ্রকৃতি পুনরায় আবিষ্কার করে। রেবের ছিলেন বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, অপেশাদার নাট্য পরিচালক এবং একজন স্ব-শিক্ষিত প্রকৌশলী। 

    যদিও সে কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট পায়নি, তবুও সে নির্ভীকভাবে সান ফ্রান্সিস্কোর সমুদ্রতটে দুইটি বিশাল বিশাল বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। সে ঘােষণা করে যে, এতে করে শহরের লােকজন বিপুল পরিমাণ বিশুদ্ধ পানীয় জল পাবে এবং কৃষি জমিতেও সেই জল ব্যবহার করা যাবে। সে দাবি করে এই বাঁধগুলাে করা হলে প্রায় ২০,০০০ একর জমির উন্নয়ন সম্ভব। 

    যদিও রেবের কোন রাজনৈতিক বা সরকারি কর্মকর্তা ছিল না, তবুও তিনি তার প্রস্তাব পূরণে একান্তভাবে চেষ্টা করেন। ক্যালিফোর্নিয়ার সংবাদ সংস্থাও এ ব্যাপারে অনেক সংবাদ ছাপায়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও, এই প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি কমিশন গঠন করে এবং এর ওপর আলােচনা হয়। এরপর সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীদের বিশেষজ্ঞ দল ১৯৬০ সালে এর একটি নমুনা তৈরি করে, প্রায় ১.৫ একরের। কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পরীক্ষাটি অসফল হয়। তাই পরিকল্পনাটিকে আর সামনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

    কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, আজকে কি কেউ এ ধরনের এত বড় প্রকল্প নিয়ে চেষ্টা করতে পারবে? কেউ কি এ ধরনের প্রকাণ্ড কোন রূপকল্পকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে পারবে? ১৯৫০ সালের লােকজন বড় বড় প্রকল্পকে সাধুবাদ জানাতে এবং জিজ্ঞেস করতাে যে এটা কি ঠিকভাবে কাজ করবে। কিন্তু আজকে একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষকের এমন প্রস্তাব প্রথমেই বাতিল করা হবে, ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হবে; আর কেউ দীর্ঘমেয়াদি কোন রূপকল্প নিয়ে আসলে তাকে বলা হয় ঔদ্ধত্যকারী, অযথা গর্বকারী। 

    আপনি ইচ্ছা করলে বাঁধ তৈরির এই নমুনাটি দেখে আসতে পারেন। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি শহর, সাসালিটোর গুদামঘরে রাখা আছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। জায়গাটি এখন একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়ে। ভবিষ্যতের জন্য সৃষ্টি করা এসব বড় বড় প্রকল্প এখন জাদুঘরে রাখার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। (আপনি উইকিপিডিয়ায় Reber Plan নাম দিয়ে সার্চ দিলেই ছবিসহ বিস্তারিত দেখতে পাবেন।)

    অনির্দিষ্ট আশাবাদ

    আমেরিকানরা ১৯৭০'এর পর থেকে নির্দিষ্ট আশাবাদ থেকে সরে যেতে থাকে। ১৯৮২ থেকে আমেরিকান চিন্তাধারায় অনির্দিষ্ট আশাবাদ রাজত্ব করা শুরু করে। তখন থেকেই শেয়ার বাজারের গতি ঊর্ধ্বমুখী। এরপর থেকে আমাদের অর্থনীতিতে বা যদি বলি শেয়ার বাজারে ব্যবহারিক গণিত, পরিসংখ্যান, অর্থনীতির নানান তত্ত্ব, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও নানা ধরনের কম্পিউটার প্রােগামের প্রচলন শুরু হয়। একে বলা হয় অর্থনৈতিক প্রকৌশল বিজ্ঞান। তাে ১৯৮২ সালের পর থেকে ভবিষ্যতে পৌঁছানাের রাস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই গ্রহণ লাগা অর্থনৈতিক প্রকৌশল বিজ্ঞান। গ্রহণ লাগা কেন বলছি? তারও উত্তর দিচ্ছি। 

    একজন অনির্দিষ্ট আশাবাদী জানে যে, ভবিষ্যৎ আরও ভালাে হবে। কিন্তু আসলে ঠিক কী হবে তা জানে না। তাই সে কোন নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও বানায় না। সে ভবিষ্যৎ থেকে মুনাফা নিতে চায় কিন্তু একে দৃঢ়ভাবে নকশা করে ফলাফল বের করে আনার, কোনাে কারণ দেখে না।

    একটি পণ্যকে যে বহু বছরের শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হয় তার পরিবর্তে অনির্দিষ্ট আশাবাদী কেবল যা ইতােমধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে তার ওপরই বিনিয়ােগ করে। যেমন ব্যাংকের লােকজন কেবল সেগুলােতেই বিনিয়ােগ করে যা ইতােমধ্যে অর্থ আয় করেছে। আইনজীবীরা পুরাতন মামলা নিয়েই ব্যস্ত। এমনকি ব্যক্তিগত বিনিয়ােগকারী ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠানগুলােও নতুন কোনাে ব্যবসা আরম্ভ করতে রাজি নয়। 

    ইতােমধ্যে আমাদের দেশে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তা হচ্ছে অনেকটা আখ নিংড়ে রস বের করার মতাে। এখন যদি ঐ একই আখ থেকে রস বের করতে হয় তবে আপনি কেবল আখের খােসাকেই শুকনাে বানাচ্ছেন, রস আর পাচ্ছেন না। এজন্যই দেখা যায় প্রথাগত ব্যবসাগুলােতে ইদানিং এত বেশি প্রতিযােগিতা। সবাই পূর্বের জায়গা থেকে, পূর্বের আখ থেকে রস বের করতে উঠেপড়ে লেগেছ।

    এমনকি আমাদের সাত্মক পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের পিতামাতাও তাদের সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত পথগুলােতে চলতে উৎসাহিত করে। এটা অদ্ভুত হলেও সত্য যে, আমাদের ইতিহাস এক নতুন ধরনের অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টি করছে। যারা ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে জন্ম নিয়েছে তাদেরকে প্রথম ১৮ বছর কিছুই করতে হয়নি। 

    বছরকে বছর সবকিছু এমনিতেই উত্তরােত্তর উন্নত হচ্ছিল। তখন ছিল প্রযুক্তি উর্ধ্বমুখী একটি সময়। আপনাকে কিছুই করতে হয়নি। তাই তখনকার প্রজন্ম অনেক বেশি প্রত্যাশা ও অল্পকিছু নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যায়। কিন্তু ১৯৭০ সালে যখন প্রযুক্তিগত (টেকনােলজিকাল) অগ্রগতি থমকে দাঁড়ায়, তখন অভিজাত শ্রেণির এই প্রজন্ম অত্যধিক আয় নিয়ে তাদের সাথী সঙ্গীদের রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। 

    এই প্রজন্মের বয়স্করা ধীরে ধীরে আপনাআপনি ভাবেই ধনী এবং আরও ধনী ও সফল হতে লাগলাে। আর পরবর্তী প্রজন্ম পিছনে পড়ে রইল। এই অভিজাত প্রজন্ম যারা সংবাদ মাধ্যমগুলােকে তৈরি করে, তারা তাদের আশাবাদকেই সাফল্য বলে তুলে ধরেছে এবং কেউ এই ব্যাপারে কোন প্রশ্নও তুলছে না। 

    সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বই pdf থেকে কিছু অংশ পড়ে আপনাদের কেমন লেগেছে জানাবেন।

    Tags

    Post a Comment

    0Comments
    * Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
    Post a Comment (0)

    #buttons=(Accept !) #days=(20)

    Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
    Accept !