হাউ টু টক টু এনিওয়ান pdf নিয়ে আমরা কি কখনো ভেবেছি? আমরা অনেকেই অন্যদের সাথে কথা বলতে গেলে দ্বিধা-দ্বন্ধে ভুগি। কিভাবে অন্যদের সাথে কথা বলা চালিয়ে নিতে হয় তা জানি না। যেকারণে বিভিন্ন সময় বিব্রত হতে হয়, পড়তে হয় নানা সমস্যায়।
তুমি কি সেই ব্যক্তিদের কখনাে প্রশংসা করেছ, যারা জানে হাউ টু টক টু এনিওয়ান ইন এনি মোমেন্ট, যাদের দেখলে তােমার সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণ মনে হয়? তারা ব্যবসায়িক অধিবেশনে যেমন সাবলীলভাবে কথা বলেন তেমনি সামাজিক কার্যক্রমেও তাদের জুড়ি নেই। তারাই ওইসব লােক যারা কর্মক্ষেত্রে অনন্য, জীবনসঙ্গী হিসেবে মধুর, বন্ধুদের মাঝে বিনয়ী, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী এবং রুচিতে আধুনিক। একটু ধৈর্য ধরে দেখাে তাে, তাদের অনেকের চেয়ে তুমি অধিক বুদ্ধিমান নও কি? তােমার থেকে অনেক ক্ষেত্রে তারা শিক্ষায়ও পিছিয়ে। এমনকি তাদের অনেকে দেখতেও কুৎসিত! এর ব্যখ্যা কীভাবে দেবে? (কিছু মানুষ ভাবে, ওরা জন্ম থেকেই এসব গুণ পেয়েছে। কারাে মতে তারা রপ্ত করেছে, এমনও মানুষ পাওয়া যায় যারা ভাবে, তারা ভাগ্যবান তাই পারে! তাদের বলি, নিজের ধারণা পরিবর্তন করাে।
তারা কীভাবে অন্যদের থেকে নিজেদের আলাদা করেছে, বিশেষ কোনাে কৌশল ব্যবহার করে? তুমি পর্যবেক্ষণ করলেই দেখবে, তাদের কেউই একদিনে সব অর্জন করে নেয়নি। বরং বছরের পর বছর তারা শিখেছে, শত শত মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছে, ধাপে ধাপে নিজেদের মাঝে ভালাে গুণের বিকাশ ঘটিয়েছে, ধাপে ধাপে উপরে উঠেছে, সামাজিক এবং কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। ব্যর্থরা প্রায়শই অভিযােগ তােলে, সফল ব্যক্তিদের সফলতার কারণ তাদের বংশ মর্যাদা এবং ধন সম্পদ। সফল ব্যক্তিদের কাছ থেকে বন্ধুত্ব, ভালােবাসা কিংবা ব্যবসায়িক সহযােগিতা পেতে ব্যর্থ হয়ে ওরা তাদের কটাক্ষ করে এবং নিজেদের দেয় মিছে সান্ত্বনা।
তাদের অভিযােগের শেষ নেই। অভিযােগকারীরা কখনােই নিজের ভুল স্বীকার করে না। তারা বুঝতে পারে না তাদের নড়বড়ে সম্পর্ক এবং যােগাযােগের অপরিপক্বতা তাদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। প্রশ্ন থেকেই যায়, কেন তারা এসবের দিকে মনযােগ দেয় না? কারণ সফল ব্যক্তির কিছু পদক্ষেপ তাদের অন্যদের থেকে আলাদা করে দেয়, তাদের কৌশলী করে তােলে- যা খুব সহজেই অন্য একজন সফল ব্যক্তির সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করে।
হাউ টু টক টু এনিওয়ান by লেইল লোনডেস
ম্যানেজমেন্টে যখন পুরনাে ধ্যান-ধারণার মানুষ জায়গা পায়, তারা সব সময় অন্যের বিরুদ্ধে অভিযােগ করতে ব্যস্ত থাকে। কেউ ভালাে কিছু করে ফেললে তারা তাকে হিংসা ও বিরােধিতা করতে থাকে। আজকের দিনে যেসব নারী-পুরুষ, যারা দেশ চালাচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদান রাখছে, এগুলাে কোনাে অলৌকিক ঘটনা নয় বরং কিছু কৌশলের ফলাফল। তারা যেদিকেই হাত বাড়ায় সফলতা তাদের আলিঙ্গন করে। সেই বিশেষ কৌশলগুলাে আসলে কী? তুমি অনেকগুলাে খুঁজে পাবে যার মাঝে কিছু কৌশল তােমার বন্ধুত্বকে আরও মজবুত করবে, কিছু কৌশল খুব সহজে কারাে মন জয় করিয়ে নিতে সহায়ক হবে এবং কিছু ব্যাপার মানুষকে আগ্রহী করে তুলবে তােমাকে ভালােবাসতে। কিছু গুণ বসকে বাধ্য করবে তােমাকে কাজে নিতে এবং পদোন্নতি দিতে, কিছু গুণ খদ্দেরকে পুনরায় তােমার কাছে ফিরিয়ে আনবে এবং তােমার থেকেই ক্রয় করাবে। আমাদের প্রত্যেকের থলিতেই এমন কিছু কৌশল জমে আছে এমনকি অনেকের থলিতে তা ভরপুর। এসব গুণ যারা রপ্ত করে রেখেছে তারা একেকজন পৌছে গেছে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে। How to Talk to Anyone bangla book তােমাকে ৯২টি এমন ছােটোখাটো কৌশল শেখাবে যা রপ্ত করলে তুমি পৌছে যাবে তােমার সফলতার শিখরে।
কথা বলার ৯২ টি ছোটখাটো কৌশল
ভেতরের পাতায় যা আছে
অধ্যায় এক
- দশ সেকেন্ডে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ করাে
- তুমি কথা বলার পূর্বে তােমার শরীর কথা বলে
- কীভাবে সঠিক জায়গায় বােমাগুলাে ফাটাবে?
- যখন তুমি প্রেমিক পুরুষ
- তােমার হাঁটার ধরনই বলে দেয় তুমি একজন প্রকৃত বিজয়ী
- লুকানাে বাচ্চামিগুলাে বের করে আনাে
- যে গুপ্ত জ্ঞান তােমায় পছন্দনীয় করে তুলবে কোনাে কিছু করার পূর্বে অন্তত একবার পুরােটা কল্পনার চোখে দেখে নাও
অধ্যায় দুই
- ‘হ্যালাে’ এর পর কী বলে কথা এগিয়ে নেব?
- ছােট্ট কথােপকথনভীতি চিকিৎসাযােগ্য?
- মনের ভাব মিলার উপরে নির্ভর করছে তােমার বিক্রয় বাড়বে না কমবে
- গতানুগতিক কিন্তু আকর্ষণীয় দিক
- সব সময় ‘হােয়াটিজিট’ সঙ্গে রাখাে
- হুজদ্যাট' বা উনি কে?
- গতানুগতিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিও না
- শব্দ গােয়েন্দা হও
- পণ্যের সাথে সাথে তােমাকেও বিক্রয় করাে এই কৌশলটা খাটিয়ে
- তােমার ভালাে দিকগুলাে উপস্থাপন করাে
- অধ্যায় তিন বড়দের মতাে কথা বলাে নিজের মৌখিক জীবনবৃত্তান্ত সাজিয়ে নাও তােমার আভিজাত্যকে ফুটিয়ে তােলার সহজ পথ
- ওটা তাে আমি জানি, এমনটা প্রকাশ করা থেকে দূরে থাকো
- যে জিনিস হাত দিয়ে ধরা যায় তা দশ হাত লম্বা লাঠি দিয়ে ধরতে চাওয়া বােকামি
- পেশাদার বক্তাদের অনুসরণ করাে
- যেকোনাে পরিস্থিতির মনি-মুক্তো
- কোদালকে কোদাল বলতে শেখাে
- উত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকো
- ভাঙা ক্যাসেটটাই বাজাও
- বড় দান বুঝে শুনে দিতে হয়
- গতানুগতিকভাবে ধন্যবাদ দিও না
- অধ্যায় চার যেকোনাে ভিড়ে নিজেকে ওদেরই একজন হিসেবে প্রমাণ করাে
- ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি
- সবকিছু নির্ভর করছে তােমার শুরুর প্রশ্নে আরাে বেশি
- তাদের বিষয়ে আরাে বেশি জানতে চেষ্টা করাে
- বৈশ্বিক ইনসাইডার হয়ে ওঠো
- দামাদামি না জানলে ঠকতে হবে
- অধ্যায় পাঁচ কেন আমরা কাছাকাছি ধারণা পােষণ করি?
- নিজেকে একজন ইম্প্যাথাইজার হিসেবে গড়ে তােলাে
অধ্যায় ছয়।
- অত্যধিক প্রশংসা করার কার্যকারিতা
- তােমার কবরের দেয়ালে কী লেখা দেখতে চাও?
অধ্যায় সাত
- তাদের হৃদয়ে স্থান করে নাও বেশি বেশি করে নাম উচ্চারণ করাে ঘরণীকে প্রাপ্য সম্মান দাও
- তােমার সময় এখন কী রঙের?
- দশ সেকেন্ডের অডিশন
- অধ্যায় আট
- যেভাবে রাজনীতিবিদদের চর্চিত পদ্ধতি কোনাে অনুষ্ঠানে খাটাবে ভুড়িভােজন নাকি পরিচিতি?
- তুমিই চুজ করাে, নয়তবা অন্য কেউ এসে তােমায় চুজ করবে
- সুযােগ হাতছাড়া করাে না বিজনেস কার্ড সংরক্ষণ
- চোখের ভাষা বিক্রি
অধ্যায় ৯
- সফলতার ছােট্ট ছােট্ট মণি-মুক্তো দেখেও দেখাে না, শুনেও শুনাে না
- ভরসার কণ্ঠস্বর হও
- আমি কাজটা বন্ধুত্বের খাতিরে করেছি
- ডাইনিং শুধুমাত্র খাবার পরিবেশনের জন্য
- বাগে পেলেই সব সময় হামলে পড়তে নেই
- আরাে বেশি আবেগের সংমিশ্রণ ঘটাও শ্রোতাদের নেতা হও
- কার পয়েন্ট কত?
- শেষ পাঠ তােমার গন্তব্য
- এবার কয়েনের বিপরীত পিঠ দেখা যাক
অধ্যায় এক
তােমার হাতে মাত্র দশ সেকেন্ড সময় আছে, নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ করার
তােমার ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তােলার অবিশ্বাস্য, অপরিহার্য এবং অপ্রতিরােধ্য সব কৌশল... কারাে সাথে প্রথম সাক্ষাতের সময়, বিশেষ করে প্রথম চোখাচোখির মুহূর্তটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এটাই সেই সময়, যেটাতে নিজের গ্রহণযােগ্যতা অর্জন করে নিতে হয়। শুরুর মুহূর্তটা এজন্যও গুরুত্বপূর্ণ যে, আজীবন সে তােমার এই সময়টা মনে রাখবে, তােমার একটা প্রতিচ্ছবি সে এই মুহূর্তটার উপরে ভিত্তি করেই গড়ে নেবে। মনে রেখাে, অবস্থানটা হয়তাে সারা জীবনের জন্যই অটুট থাকবে।
একজন চিত্রশিল্পি খুব সহজেই দোদুল্যমান এবং দ্রুত বয়ে চলা জীবনের এসব আবেগীয় মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখতে পারেন।
রবার্ট গ্রসম্যান (বব) নামে আমার এক বন্ধু রয়েছে, যে ফোবস, নিউজ উইক, স্পাের্টস ইলাস্ট্রেটেড, রােলিং স্টোনসহ উত্তর আমেরিকার অন্যান্য জনপ্রিয় প্রকাশনীর হয়ে ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করে থাকে। ববের চিত্রের একটি বিশেষ গুণ ছিল। সে যেসব ছবি আঁকত, ওগুলাে শুধুমাত্র সমগ্র দৃশ্যপটটাই অঙ্কন করত না, বরং প্রত্যেকটা দৃশ্যপট বিস্তারিত ফুটিয়ে তুলে আনত। ওর ছবি আঁকার স্কেচ বাের্ড থেকে সব সময় আলাের ঝলকানি ভেসে আসত। ববের চিত্রে যেসব লােকপ্রিয় ব্যক্তির ছবি দেখা যেত, মনে হতাে তাঁরা সবাই যেন নিজস্ব স্বতন্ত্রতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। যেমন- ‘মেডােন্না’-এর অগ্নিমূর্তি, নিউট গ্রিনরিচ’-এর স্বেচ্ছাচারিতা কিংবা লিওনেল হেলমপ্লেইয়ের অসভ্যতা সবই তার হাতের জাদুতে ফুটে উঠত। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বব, দুষ্টুমি করতে পছন্দ করত।
খাবার পরিবেশনকৃত রুমালে টুক করে কোনাে এক অতিথির ছবি এঁকে বসতাে সে! জট লেগে যেত ববের আশপাশে, অনেকেই আবিষ্কার করত, তাদেরই পরিচিত বন্ধুর ছবি ওর হাতের রুমালে জ্বলজ্বল করছে! এ যেন চোখকে বিশ্বাস করানাের মতাে নয়! ছবি আঁকা শেষ হলে বব ছবিটি কাক্ষিত ব্যক্তিকে উপহার হিসেবে দিয়ে দিত। কিছু উৎসাহী জনতা চোখ বড় বড় করে অঙ্কিত ছবির সাথে বাস্তবের ব্যক্তির মিল খুঁজে ফিরে। নিজের ছবি দেখে সবাই যে খুশিতে আটখানা হতাে, ওরকম বলার উপায় নেই। কেউ কেউ হালকা নরম সুরে বলত, বাহ! বেশ এঁকেছেন। কিন্তু ছবির ব্যক্তিটি পুরােপুরি আমার মতাে হয়নি।
How to talk to anyone bangla book
উৎসাহী অতিথিরা সমস্বরে এর সত্যতা ফুটিয়ে তুলে, ব্যাপারটা, সত্য। আস্তে করে মূল আলােচনা থেকে দূরে গিয়ে সবাই নিজেদের সংশয় কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। হতভম্ব ব্যক্তিটির তখন রুমালের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনাে কাজ থাকে না।
একবার ববের চিত্রশালায় যাওয়ার সুযােগ আমার হয়েছিল। তার ছবি আঁকার কারিশমা আমাকে আগেই মুগ্ধ করেছে। আমি চেপে না রাখতে পেরে গােপন প্রশ্নটা ঝেড়েই ফেললাম, তুমি কীভাবে এত নিখুঁতভাবে মানুষের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তােলাে, বব? তার জবাবটা ছিল সাদামাটা। সে বলল, আমি জাস্ট দেখি আর এঁকে ফেলি। উত্তরটা আমার মনঃপূত হয়নি। আমি আবার বললাম, না, মানে আমি বােঝাতে চাচ্ছিলাম, ছবি আঁকার আগে কি তুমি তাদের সম্পর্কে বিশদ জানার চেষ্টা করাে? যেমন তার বংশ, তার সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি ইত্যাদি? ও মুখ চেপে হাসল, অবশ্যই না।
তােমাকে আগেই বলেছি, আমি যা দেখি তাই আঁকি, কোনাে বিশদ গবেষণা বলে কিছু নেই। “ওহ। আচ্ছা। সে এরপর পুরাে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করল। তার মতে প্রত্যেকটি মানুষের কথা বলার ধরন, শারীরিক অঙ্গভঙ্গি, হাঁটা-চলা দেখেই একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে ফেলা যায়। এর জন্য বিশদ গবেষণা করা লাগে না। এরপর বব আমাকে তার ব্যক্তিগত ফাইল থেকে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির ব্যাঙ্গচিত্রগুলাে দেখাতে আরম্ভ করল। “দেখাে, একটা ছবির দিকে বব ইঙ্গিত করল। ছবিতে সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনকে দেখা যাচ্ছে।
বব এরপর খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দেখাল, ‘এই যে শরীরের এই অংশটা দেখাে। দেখাে তার শারীরিক ভঙ্গিমা দেখে স্পষ্ট বােঝা যাচ্ছে, তাঁর ব্যক্তিত্বে কী পরিমাণ বাচ্চামি খেলে যাচ্ছে! এরপর জর্জ বুশের ছবি সামনে এলাে। জর্জ বুশের কাঁধের দিকে নির্দেশ করে সে, “দেখাে, এই ছবিতাে বুশকে কেমন আনাড়ির মতাে দেখাচ্ছে না? তারপর আমেরিকার আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের ছবি দেখাল, তার হাসির জন্য তাকে কী প্রফুল্লই না দেখাচ্ছে! খেয়াল করেছাে? এরপর নিক্সনের ধূর্ততা দেখাল সে। মাথার দিকে দেখিয়ে বলল, “দেখাে, এই মাথার কাত হয়ে থাকা দেখেই বােঝা যাচ্ছে, সে কতটা ধূর্ত! ফাইলের অনেক ভেতরে দেখা গেল ফ্রাঙ্কলিং ডিলানাে রুসভেল্টকে, যার উঁচু নাকটা খাড়া আকাশমুখী হয়ে আছে। সবশেষে তাকে নিয়ে তার মন্তব্য জানাল বব, ‘রুসভেল্ট, এই ব্যক্তিত্বের গুণেই এফডিআরের গর্বের বস্তু হয়ে আছেন।
ও আরাে যােগ করল, “আসলে আমার চিত্রে কারাে যে বিষয়টা বেশি প্রভাব ফেলে তা হলাে, তার মুখ আর শরীরের ভঙ্গিমা। জানাে তাে, জনশ্রুতি আছে, শরীর কথা বলে। এজন্য পরিচয়ের শুরুটা খুবই গুরুত্ব রাখে। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন; তাই তাে? ব্যাখাটা খুবই সােজা, প্রথম সাক্ষাতের সময়ই তােমার পাশের ব্যক্তিটির মস্তিষ্কে তােমার সমগ্র কিছু পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে তােমার একটা আনুমানিক ব্যক্তিত্ব জমা হয়ে যাবে। এর উপর ভিত্তি করে সে তােমার সম্পর্কে খুবই সংক্ষেপে একটা উপসংহারে চলে আসবে।
ওই কোম্পানিতে তার অবস্থান কেন এত গুরুত্বপূর্ণ, সে কীভাবে এত সাবলীলভাবে কাজগুলাে করে এবং কোম্পানির জন্য তাদের আত্মত্যাগের কথা আমি নিজ থেকে তুলে ধরতাম। চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করেই বুঝে নিতাম, কে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, আর কে কম গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের পেটের কথা বা ধারণা বের করার ক্ষমতা আমাদের নেই। চাইলেই আমরা তার সম্বন্ধে এমন কিছু বলতে পারি না, যা আমাদের মাথায় এসেছে। এ কথা সবার জন্যই প্রযােজ্য। আমরা যে কারাে সম্পর্কে ধারণা পােষণ করি সম্পূর্ণ নিজের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে। বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা বলছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আবেগ, আমাদের ধারণা নিতে প্রভাবিত করে।
কৌশল ৩৭ গতানুগতিকভাবে ধন্যবাদ দিও না
কখনােই ধন্যবাদ শব্দটা একাকী ব্যবহার করবে না। এর সাথে ন্যূনতম কিছু জুড়ে দেবে যেটা পরিস্থিতির সাথে যায়। এই যেমন, ধন্যবাদ, আমার সাথে আসার জন্য।
How to talk to anyone bangla book pdf
অধ্যায় চার
যেকোনাে ভিড়ে নিজেকে ওদেরই একজন হিসেবে প্রমাণ করাে
ওরা কী নিয়ে কথা বলছে? নিজেকে প্রচণ্ড একা ফিল করছ? আশপাশে সবাই আছে। সবাই হাসছে কথা বলছে। কিন্তু তুমি বড্ড একা? আশা করি জীবনের কোনাে না কোনাে পর্যায়ে তােমরা এই একাকিত্ব অনুভব করেছ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে হয়ত অনুভব করেছ, এই ভিড়, এই আয়ােজন, এসব তােমার জন্য নয়। চুপচাপ একপাশে দাঁড়িয়ে বৃথা হাসার চেষ্টা করে যাচ্ছ। আশপাশে যারা আড্ডা দিচ্ছে তাদের কথাগুলাে তােমার বুঝে আসছে না। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকারদের আড্ডা হচ্ছে, তারা এমন সব বিষয়ে কথা বলছে, যে বিষয়ে তােমার জ্ঞান ধরতে গেলে শূন্যের কাতারে। আবার আগ বাড়িয়ে কথা বলতে গেলে ভুল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ভয়ে তুমি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছ। তােমার মনে হচ্ছে সবাই তােমাকে দেখে হাসছে।
এই ব্যাপারটা আমার জীবনে ঘটেছে। আমি তখন স্কুলের ছাত্রী। আমার আশপাশে যতগুলাে ছেলে আছে, ওদের সাথে আমায় ভীষণ দূরত্ব। ওদের কথাবার্তার সমস্তটাজুড়ে শুধুমাত্র গাড়ি নিয়ে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি দামি এসব গাড়ির আলাপ আলােচনা করতেই তারা খুশি হতাে। আমি বেচারি পড়ে গেলাম বেকায়দায়। গাড়ির প্রতি আমার কোনাে কালেই আগ্রহ ছিল না, জানাশােনাও শুন্য। ওদের। সাথে কথা বলতে গেলে অবশ্যই গাড়ি নিয়েই কথা বলতে হবে। আমার জীবনের এমন পর্যায়ে দেবদূতের মতাে একদিন আম্মু একটা বই উপহার দেন। বইটার পুরােটাই গাড়ি নিয়ে আলােচনা।
গাড়ির কোথায় কোন যন্ত্রাংশ আছে আমার মুখস্থ হয়ে গেল। তখনকার দামি দামি গাড়িগুলাের সাথে সাথে ওদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন ক্যামশ্যাফট, ক্র্যাঙ্কশ্যাফট, এক্সজস্ট ম্যানিফোলড ইত্যাদির নাম আমার নখদর্পণে। আমি ছেলেদের ভিড়ে কার নিয়ে কথা বললাম। বিংগাে! ব্যাপারটা সত্যিই কাজে দিয়েছে। তারা আমাকে তাদের বন্ধু হিসেবে খুব সহজেই মেনে নিয়েছে। ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমার লাজুকতা দূর হয়েছে, যা আমাকে সবার সাথে মিশতে সহজ করেছে। আমার জেনারেশনের সেই ছােট্ট বাচ্চাদের এসব গ্রুপিংয়ের মতাে এখনকার বড়দের ভিড় গভীর হয় বিভিন্ন টপিকে।
সবাই নিজের জানা বিষয়ে আড্ডা দিতে পছন্দ করে। ফলে আড্ডাটা যদি ইঞ্জিনিয়ারদের হয়ে থাকে তবে ইঞ্জিন, টারবাইন কিংবা বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং টার্মস এসেই যায়। কে কতটা প্রজেক্ট করেছে, এসবও আলােচনা লম্বা করে তােলে। তুমি বেচারা বিবিএ করা পাব্লিক। তুমি এত কঠিন কঠিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়গুলাে বুঝেই না। ভেবেই বসে আছ, কীভাবে এসব ভিড়ে নিজেও অংশ নিতে পার? সেক্ষেত্রে মাছেদের যেভাবে তােমরা টোপ দাও, এখানেও তােমাকে তােমার কথার। টোপ ফেলতে হবে। তাদের কথার মাঝে এমন একটা বিষয় পেলে ওটা তুমি হালকা জানাে, ওটাই হতে পারে তােমার টোপ।
লেখক ডেল কার্নেগি একটা কথা বলে গেছেন, আন্তরিকতার সাথে তােমার আগ্রহ দেখাও। মানুষ অবশ্যই তােমার সাথে কথা বলবে। আরেকটা ব্যাপার, তােমার অবশ্যই নতুন কিছু জানার আগ্রহ থাকতে হবে। এটাই তােমাকে প্রকাশ করবে, তুমি কথা বলার জন্য আকর্ষণীয় কেউ একজন। আমরা এই অধ্যায়ে জানব, কী কী কৌশল ব্যবহার করলে মানুষ তােমাদের তাদেরই একজন ভাববে; বাইরের কেউ ভাববে না। জানতে অবশ্যই মনযােগ দাও এই অধ্যায়ে।
হাউ টু টক টু এনিওয়ান pdf অনুবাদকের পরিচিতি
এ. এস. এম. রাহাতের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফেনী। জেলার দাগনভূঞা থানার গনিপুর গ্রামে। ফেনী। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়াশােনার সময়ে মূলত লেখালেখিতে হাতেখড়ি। লিখেছেন সাহিত্য ম্যাগাজিন, যৌথ গল্প সংকলন এবং সােশ্যাল মিডিয়াতে। অটোমােবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে উচ্চ শিক্ষা শেষ করেছেন ভারতের লাভলী প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনুবাদ ও মৌলিক উপন্যাসে।
জীবনধর্মী যেকোনাে লেখাই লেখককে আকর্ষণ করে ভীষণভাবে। যতদিন বেঁচে আছেন কলম চালিয়ে যেতে চান তিনি। এছাড়া দ্যা কোলাবরেটর(অনুদিত উপন্যাস), শেকল ছেড়া পাখি (মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস) , বিষাদনামা (জীবনধর্মী উপন্যাস) এর কাজ তিনি শেষ করেছেন। সব ঠিক থাকলে বইগুলাে আলাের মুখ দেখবে শীঘ্রই।
Sadaf amin vhai..
ReplyDeleteEi boitar Bangla pdf deya jabe?